প্রকাশিত: Mon, Mar 11, 2024 11:00 PM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 3:49 AM

[১]বেইলি রোড ট্র্যাজেডি: ১১ দিন পর বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর

সুজন কৈরী ও মোস্তাফিজুর রহমান: [২] রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ ১১ দিন পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

[৩] সোমবার বিকেলে বাবা সবুজ শেখের কাছে বৃষ্টির মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এর আগে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়। 

[৪] রোববার সিআইডি’র ডিআইজি একেএম নাহিদুল ইসলাম জানান, বাবা সবুজ শেখ ওরফে শাবলুল আলম এবং মা বিউটি খাতুনের দেওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মিলেছে বৃষ্টির ডিএনএ। অর্থাৎ অভিশ্রুতিই আসলে বৃষ্টি খাতুন।

[৫] সিআইডি ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর আলম মাতুব্বর সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানে একজনের মরদেহের দুইজন দাবিদার পাওয়া যায়। কালী মন্দিরের একজন দাবি করেন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী সেখানে যাতায়াত করতেন এবং তার বাবা দাবি করেন সে বৃষ্টি খাতুন। পরে আদালতের নির্দেশে তার মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং তার বাবা-মায়ের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার ডিএনএ বাবা-মায়ের সঙ্গে মিলে যায় এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও সার্টিফিকেটের সঙ্গে মিলে যায়। রমনা কালী মন্দিরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে তাদের দাবি নেই বলে পুলিশকে জানানো হয়। যেহেতু অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের ডিএনএ স্যাম্পল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে মিলে যায় তাই তার বাবার কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। 

[৬] বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ জানান, সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমিই তার বাবা, আল্লাহর কাছে হাজার হাজার লাখো কোটি শুকরিয়া করছি। মরদেহ পেয়েছি, তাকে  গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাব। সেখানেই ইসলাম ধর্মমতে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

[৭] সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারা আমার মেয়ের মরদেহ নিয়ে ষড়যন্ত্র করলো আমি জানি না। আগে মেয়ের মরদেহ দাফন করি। পরে যারা আমার মেয়ের মরদেহ নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নেব কিনা ভেবে দেখবো।

[৮] গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মারা যান বৃষ্টি খাতুন। বৃষ্টি তার বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুতি নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি মূলত মুসলিম পরিবারের সন্তান। কিন্তু অভিশ্রুতি নামে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার কারণে তার মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মৃত্যুর পর রমনা মন্দিরের পুরোহিত বৃষ্টিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুন নিজের সন্তান বলে দাবি করেন। পরে মরদেহ হস্তান্তর আটকে শনাক্তে নেওয়া হয় ডিএনএ নমুনা। নমুনা নেওয়ার ১১ দিন পর বৃষ্টির ডিএনএর সঙ্গে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ মিলেছে।

[৯] বৃষ্টির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম গ্রামের পশ্চিমপাড়ায়। কলেজের সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর নাম বৃষ্টি খাতুন। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী